নির্বাচন নিয়ে সংশয়: তৃণমূলকে বিএনপির বার্তা


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০১৮, ১০:০০ এএম
নির্বাচন নিয়ে সংশয়: তৃণমূলকে বিএনপির বার্তা

ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংশয় সব মহলে। যদিও ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- কেউ নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। বর্তমান সরকারের অধীনেই সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে।

এদিকে গতকাল ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। তাই খুব অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই নির্বাচনকালীন ছোট মন্ত্রিপরিষদ গঠন ও সংযোজন-বিয়োজনের।

অন্যদিকে বিএনপি বলছে, খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে শেখ হাসিনার অধীনে এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না। সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বড় প্লাটফর্ম জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তরফে উত্থাপন করা হয়েছে ৭ দফা দাবি। কিন্তু এর কোনোটিই মানতে রাজি নয় সরকার।

ইতিমধ্যেই এ সংশয়ের পালে নতুন হাওয়া যোগ করেন ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।  সম্প্রতি সময়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, আমি দেশবাসীর উদ্দেশে কিছু বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। নির্বাচন নিয়ে এখন অনেক সংশয় রয়েছে। নির্বাচন কখন হবে জানি না।

একটি দল ৭ দফা দিয়েছে (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট)। সরকার তা মানতে রাজি নয়। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী মানা সম্ভব নয়। এ অবস্থার মধ্যে আগামী দিনগুলো স্বচ্ছদিন বলে মনে হয় না আমার।  

অন্যদিকে আন্দোলন ও নির্বাচন দুটিরই প্রস্তুতি রাখতে বিএনপি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেবে কি নেবে না, সে সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত করেনি বিএনপি। তবে ‘ভিশন-২০৩০’-এর আলোকে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির পাশাপাশি দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকার খসড়াও করে রেখেছে বিএনপি।

এর উদ্দেশ্য হলো নির্বাচনে অংশ নিতে গেলে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে যাতে হিমশিম খেতে না হয়। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে দলের এ অবস্থানের কথা জানা গেছে।

বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের স্থায়ী কমিটির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেন। প্রতিটি আসনে আগ্রহী প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়  সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বোর্ডে ডাকা হয়।

তবে এবার সমস্যা হলো, নির্বাচনের আগে মুক্তি না মিললে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বোর্ডে উপস্থিত থাকতে পারছেন না। এ ছাড়া আরো কিছু কারণে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে এখনো এক ধরনের দোটানায় রয়েছে।

ফলে কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো বার্তা এখনো দেওয়া হয়নি বলে নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। তবে তারা বলেন, সারা দেশের জেলা, উপজেলা ও পৌর বিএনপি নেতাদের কাছে সম্প্রতি আন্দোলন ও নির্বাচন একসঙ্গে কৌশলগত এই দুই নির্দেশনা গেছে।

এ ব্যাপারে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি মূলত আন্দোলনে আছে। কারণ দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া জনগণ এই নির্বাচন গ্রহণ করবে না। দ্বিতীয়ত, বিএনপির মতো বড় দলে সব সময়ই নির্বাচনের প্রস্তুতি থাকে এবং এখনো আছে। এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচন দুটিতেই বিএনপি আছে—এটি বলা যায়। তবে নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টি না হলে জনগণ আন্দোলনকেই বেছে নেবে।

গো নিউজ২৪/এমআর

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর